ভাষা আন্দোলন রচনা [13 পয়েন্ট]

SHARE:

ভাষা আন্দোলন এবং বাংলা ভাষার বিশ্বায়ন ভূমিকা ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হয় এবং তার পর থেকেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সংগঠিত আন্দোলনই হচ্ছে ভ...

ভাষা আন্দোলন এবং বাংলা ভাষার বিশ্বায়ন

ভূমিকা

১৯৪৭ সালে দেশভাগ হয় এবং তার পর থেকেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সংগঠিত আন্দোলনই হচ্ছে ভাষা আন্দোলন যা চূড়ান্ত রূপ লাভ করেছিলো ১৯৫২ সালে। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সালামন বরকত রফিক জব্বার শফিউর প্রমুখ বাংলা ভাষাপ্রেমীর আত্মদানের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষা রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃতি পায়। আর এ আন্দোলনের বীজ রােপিত হয়েছিল আরাে আগে অন্যদিকে এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। প্রকৃত বিচারে ভাষা আন্দোলন বাঙালির আত্মপরিচয়ের সংকট থেকে উত্তরণের প্রথম ও সবচেয়ে গুর্ত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন বাঙালি জাতীয়তাবােধের উন্মেষ ঘটে অন্যদিকে সমগ্র বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিন্ন করে স্বাধীনতার পথে অগ্রসর হয়। এটি একইসঙ্গে ছিল তৎকালীন পূর্ববাংলার সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। বলা যায় ভাষা আন্দোলনের মধ্যেই নিহিত ছিল বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের বীজমন্ত্র অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বাধীনতারর বীজ রোপিত হয়েছিলো এর মাধ্যমে।

ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্যায়

১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয় দুই ভাগে অর্থাৎ ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পাকিস্তান রাষ্ট্রের ছিল দুটি অংশ পূর্ব বাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তান। প্রায় দুই হাজার কিলােমিটারের অধিক দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক ভৌগােলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলাে মৌলিক পার্থক্য ছিল। সমগ্র পাকিস্তানের শতকরা ৫৬ ভাগ। মানুষের মাতৃভাষা ছিল বাংলা। ১৯৪৮ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদের বৈঠকে ইংরেজি ও উর্দুভাষা ব্যবহারের পাশাপাশি বাংলা ভাষা ব্যবহারের অধিকার সংক্রান্ত এক সংশােধনী প্রস্তাব উত্থাপন করেন পূর্ব বাংলা থেকে নির্বাচিত গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান এ প্রস্তাবের কঠোর সমালােচনা করেন। ফলে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সংশােধনী প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে গড়ে ওঠে তমদ্দুন মজলিস ও রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। ১৯৪৮ সালের ১০ই মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভায় বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ধর্মঘট ডাকার সিদ্ধান্ত হয়। ১১ই মার্চ পালিত সেই ধর্মঘটে পিকেটিংয়ের সময়ে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এর কিছু দিন পরে ২১শে মার্চ মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এক ভাষণে ঘােষণা করেন উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।২৪শে মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে গিয়েও তিনি একই বক্তব্য রাখেন। যখন তিনি উর্দুর ব্যাপারে তাঁর অবস্থানের কথা পুনরুল্লেখ করেন উপস্থিত ছাত্ররা সমস্বরে না না বলে চিৎকার করে ওঠে। তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘােষণার প্রতিবাদে তারা বলে উর্দু নয় বাংলা হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। পূর্ব বাংলার জনগণের মধ্যেও গভীর ক্ষোভের। জন্ম হয়। বাংলা ভাষার সম মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে।

ভাষা আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়

১৯৫২ সালের ২৭শে জানুয়ারি পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন আবারও উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ঘােষণা দেন। এর ফলে পূর্ব বাংলার জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ২৯শে জানুয়ারি সিদ্ধান্ত হয় ঢাকা শহরে প্রতিবাদী মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রভাষার দাবিতে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলাে সম্মিলিতভাবে ২১শে ফেব্রুয়ারি তারিখে সমগ্র পূর্ব বাংলায় প্রতিবাদ কর্মসূচি ও ধর্মঘটের আহ্বান করে। আন্দোলন দমন করতে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে। ফলে দিনটিতে ঢাকা শহরে সকল প্রকার মিছিল সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘােষিত হয়। কিন্তু এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।

একুশে ফেব্রুয়ারি

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে সরকারি আদেশ উপেক্ষা করে ঢাকা শহরের স্কুল কলেজের হাজার হাজার ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমবেত হয়। ১৪৪ ধারা ভঙ্গের প্রশ্নে পুরাতন কলাভবন প্রাঙ্গণের আমতলায় ঐতিহাসিক ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্ররা পাচসাতজন করে ছােটো ছােটো দলে বিভক্ত হয়ে রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই স্লোগান দিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে চায়। তারা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। পুলিশ অস্ত্র হাতে সভাস্থলের চারদিক ঘিরে রাখে। বেলা সােয়া এগারােটার দিকে ছাত্ররা একত্র হয়ে প্রতিবন্ধকতা ভেঙে রাস্তায় নামার প্রস্তুতি নিলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে ছাত্রদের সতর্ক করে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তখন পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ বন্ধ করতে অনুরােধ জানান এবং ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দেন। কিন্তু ক্যাম্পাস ত্যাগ করার সময়ে কয়েকজন ছাত্রকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অভিযােগে পুলিশ গ্রেফতার করলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আরাে অনেক ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের উপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন রফিক সালাম বরকত জব্বারসহ আরাে অনেকে। শহিদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়ে ওঠে। শােকাবহ এ ঘটনার অভিঘাতে সমগ্র পূর্ব বাংলায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

২১শে ফেব্রুয়ারি পরবর্তী আন্দোলন

২১শে ফেব্রুয়ারির ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে বিদ্রোহের আগুন। দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। ২২শে ও ২৩শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র শ্রমিক সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবী শিক্ষক ও সাধারণ জনতা পূর্ণ হরতাল পালন করে এবং সভা শােভাযাত্রা সহকারে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে। ২২শে ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহিদ হন শফিউর রহমান শফিক। ২৩শে ফেব্রুয়ারি ফুলবাড়িয়ায় ছাত্র-জনতার মিছিলেও। পুলিশ অত্যাচার নিপীড়ন চালায়। শহিদদের স্মৃতিকে অম্লান করে রাখতে ওইদিন বিকেল থেকে রাত অবধি। কাজ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হােস্টেল প্রাঙ্গণে ছাত্ররা নির্মাণ করে ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহিদ মিনার। ২৪শে ফেব্রুয়ারি শহিদ মিনারটি উদ্বোধন করেন বাইশে ফেব্রুয়ারি শহিদ হওয়া শফিউর রহমানের। পিতা। ২৬শে ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে শহিদ মিনারটি উদ্বোধন করেন দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক জনাব আবুল কালাম শামসুদ্দীন।

ভাষা আন্দোলনের অর্জন

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির আন্দোলন ভাষাকেন্দ্রিক হলেও তা পুরাে বাঙালি জাতিকে অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে। এর ফল হিসেবে ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে। যুক্তফ্রন্ট বিপুল ব্যবধানে মুসলিম লীগকে পরাজিত করে। একুশের চেতনাকে ধারণ করে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনি ইশতেহার ছিল ২১ দফা সংবলিত। ক্রমবর্ধমান গণআন্দোলনের মুখে ১৯৫৪ সালের ৭ই মে পাকিস্তান। গণপরিষদে বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গৃহীত হয়। ১৯৫৫ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চার জন্য বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের প্রথম সংবিধানে বাংলা ও উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো বাংলা ভাষা আন্দোলন মানুষের ভাষা ও সংস্কৃতির অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘােষণা করে যা বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে গভীর শ্রদ্ধা ও যথাযােগ্য মর্যাদার সাথে উদযাপিত হয়। দিবসটির এই আন্তর্জাতিক মর্যাদা লাভ করতে কানাডা প্রবাসী রফিকুল ইসলাম ও আবদুস সালাম উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।

ভাষা আন্দোলনভিত্তিক সাহিত্য

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ফলে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নতুন গতি লাভ করে। রচিত হয় ভাষা আন্দোলন কেন্দ্রিক অনেক কবিতা গান গল্প উপন্যাস। ১৯৫৩ সালে হাসান হাফিজুর রহমানের সম্পাদনায় একুশের প্রথম সাহিত্য সংকলন একুশে ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয়। একই বছর মুনীর চৌধুরী কারাগারে বসে কবর নাটক রচনা করেন। আবদুল গাফফার চৌধুরী লেখেন গান আমার ভাইয়ের ঙানাে একুশে ফেব্রুয়ারি। কাদতে আসিনি ফাসির দাবি নিয়ে এসেছি কবিতা রচনা করেন মাহবুব উল আলম চৌধুরী শামসুর রাহমান রচনা করেন বর্ণমালা আমার দুঃখিনী বর্ণমালা আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ রচনা করেন মাগাে ওরা বলে কবিতা। জহির রায়হান একুশকে নিয়ে রচনা করেন উপন্যাস আরেক ফাল্গুন (১৯৬৯)। এছাড়া ওই সময়পর্ব থেকে বর্তমান পর্যন্ত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন বাংলা সাহিত্য চর্চার অন্যতম অনুপ্রেরণা।

ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের প্রধান তাৎপর্য এই যে বাঙালি জাতি তার জাতীয়তাবােধ ও অধিকার সম্পর্কে প্রথম সচেতন হয়। ভাষার প্রশ্নে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। এর ফলে পূর্ব বাংলায় গড়ে ওঠে একটি সচেতন মধ্যবিত্ত শ্রেণি। এরপর যত আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে তার পেছনে কাজ করেছে ভাষা আন্দোলনের উজ্জ্বল স্মৃতি। ভাষা আন্দোলনের প্রেরণায় ১৯৬২ র শিক্ষা আন্দোলন ১৯৬৬ র | ছয় দফা এবং ১৯৬৯ র গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয় অর্জিত হয়েছে। তবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করা ছিল ভাষা আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য। এখনও সেই লক্ষ্য পুরােপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।

বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি ও টিকিয়ে রাখতে আমাদের করণীয়

আমাদের এই মাতৃভাষা বাংলা এমনি এমনি আসেনি। এজন্য অনেকেই হতে হয়েছে শহীদ এবং তাদের রক্তের উপর ভর করেই দাঁড়িয়ে আছে আমাদের বাংলা ভাষা। আমাদের বর্তমান প্রজন্মকে এই বাংলা ভাষাকে টিকিয়ে রাখতে হবে এবং বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করতে হবে। বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করতে সাহিত্য চর্চা হচ্ছে এক অনন্য একটি উপায়। পাশাপাশি আমাদের সকলকেই ভাষার প্রতি হতে হবে শ্রদ্ধাশীল। তবে হবে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি এবং তা টিকে থাকবে সর্বস্তরের জনগণের কাছে।

ভাষা আন্দোলন ও অর্থনৈতিক সচেতনতা

খুব বেশি জোর দিয়ে যদি বলতে হয় তাহলে বলতে হবে ভাষা আন্দোলনই ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছিল। কারণ এ আন্দোলনের মাধ্যমেই বাঙালি জাতি অধিকার সচেতন ও আত্বসচেতন হয় নানা ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে পারে জাতীয়তাবােধের উন্মেষ ঘটাতে সক্ষম হয় ভাষা আন্দোলনের ফলেই ১৯৫৪ ৫৮ ৬২ ৬৯ ৭০ এর ‘আন্দোলনের পথ ধরে ১৯৭১ সালে বিশ্বের ইতিহাসে বাংলাদেশ নামক একটি নতুন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

শহিদ দিবস

প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি আমরা যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে শহিদ দিবস পালন করে থাকি ঐদিন সেখানে। আমরা জানা অজানা বীরদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানাই।

ভাষা আন্দোলন এবং বাংলা ভাষার বিশ্বায়ন

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি এদেশের আপামর ছাত্র সমাজের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে যে মাতৃভাষা বাংলা অর্জিত হয়েছে তার গণ্ডি এখন শুধু দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং একুশে ফেব্রুয়ারি এবং ভাষা আন্দোলনের চেতনা আজ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বতত্র। ভাষার জন্য বাঙালি জাতির এ আত্মত্যাগ আজ নতুন করে বিশ্বকে ভাবতে শিখিয়েছে মাতৃভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে। ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক সংস্থা (UNESCO) সাধারণ পরিষদে আমাদের জাতীয় চেতনার ধারক একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তের মানুষ আজ বাঙালিদের মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছে। সালাম বরকত রফিক জব্বারের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলা ভাষা আজ যে বৈশ্বিক মর্যাদা লাভ করেছে তা মূলত আমাদের জাতীয় চেতনাবোধের বিজয়। ইউনেস্কোর গ্রহীত প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে বলা হয় যে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে ভাষা সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার। মাতৃভাষার প্রচলন কেবল ভাষাগত বৈচিত্র্য এবং বহু ভাষাভিত্তিক শিক্ষাকেই উৎসাহিত করবে না তা ভাষাগত এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উন্নয়ন অনুধাবনের ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।বাংলাদেশসহ জাতিসংঘভুক্ত ১৯৩টি দেশ বর্তমানে একুশে ফেব্রুয়ারিকে পালন করছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। বাংলা ভাষা ও বাঙালির জন্য এ প্রাপ্তি সহস্র মর্যাদার প্রতীক।

উপসংহার

একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতিসত্তার পরিচয় নির্দেশ করে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিয়ের ভাষাশহীদদের অবদান জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। তবে তাদের আত্মদান তখনই সার্থক হবে যখন বাংলাদেশের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্র স্থান ব্যক্তি অর্থাৎ প্রত্যেক বাঙালিরই একটি দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে।


COMMENTS

Loaded All Posts Not found any posts Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy Table of Content